আর্টিকেল লেখা বা আর্টিকেল রাইটিং বরাবরই নেট দুনিয়ায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সেই কারনেই আর্টিকেল লেখার নিয়ম এবং সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বহু মানুষের আগ্রহ প্রবল। বর্তমানে তথ্য সংগ্রহ এবং ছড়িয়ে দেবার অন্যতম বড় একটি মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট। আপনার যদি কোন বিষয় কিংবা তথ্য সম্পকে জানতে হয়, সবার আগে আমরা সেগুলো ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করি। আর ইন্টারনেটেও এমন অনেক মানুষ বিদ্যমান রয়েছে, যারা এসব তাদের জ্ঞান থেকে এসব তথ্য ইন্টারনেটে প্রকাশ করে থাকে। আর এইভাবে আর্টিকেল রাইটিং বা আর্টিকেল লেখা অনেক বড় একটি মাধ্যম ইন্টারনেটে কোন তথ্য জানা এবং জানানোর ক্ষেত্রে।
ইন্টারনেট মার্কেটিং এর বাজারেও অন্যতম একটি মেরুদণ্ড হচ্ছে আর্টিকেল রাইটিং বা আর্টিকেল লেখা। একটি কোম্পানি পে-পার-ক্লিক বিজ্ঞাপনের চাইতে ইন্টারনেটে তাদের সার্ভিস ভিত্তিক মানসম্মত আর্টিকেল বা প্রবন্ধ প্রকাশ করেও অনেক বেশি সংখ্যক গ্রাহক পেতে পারে। আপনার নিজের ব্লগ বা যেকোনো ওয়েবসাইট থাকলেও, মানসম্মত আর্টিকেল লেখাই পারবে আপনার পাঠককে ধরে রাখতে!
আর্টিকেল রাইটিং এর গুরুত্ব বিবেচনা করে নব্যসময়ের এই লেখাটিআর্টিকেল লেখার নিয়ম নিবন্ধটি সাজনো হয়েছে। আপনি এই বিস্তারিত লেখা থেকে আর্টিকেল রাইটিং সম্পর্কে ধারনা একদম না থাকলেও; পড়বার পর একটি শক্ত ধারনা প্রাপ্ত হবেন বলে, আশা রাখতে পারি। এই বিস্তারিত লেখাটি লেসন মডিউল হিসেবে সাজিয়ে একটি কোর্সও প্রস্তুত করা হচ্ছে। আপনি সেই কোর্সটি করে আর্টিকেল রাইটিংএর উপর একটি বেসিক সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হতে পারবেন।
Table of Contents
বিষয় বস্তু
আর্টিকেল বা নিবন্ধ লেখবার ক্ষেত্রে শুরুতেই আপনাকে যে বিষয়টি ভাবতে হবে সেটি হচ্ছে বিষয় বা টপিক। বিষয় বা টপিকের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট বিষয় বেচে নিতে হবে। বিক্ষিপ্ত বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখে আপনি সেই আর্টিকেল লিখে নিজের মজা পাবেন না এবং পাঠকও সেই আর্টিকেল পড়ার আনন্দ খুঁজে পাবে না। একটি বিষয় বা টপিককে কেন্দ্র করে অবশ্যই কতগুলো উদ্দেশ্যে ভাগ করে দারুনভাবে আপনার আর্টিকেলের বিষয়বস্তুকে সাজাতে হবে। একটি নির্দিষ্ট বিষয় থাকলে লেখকের ক্ষেত্রেও সেই আর্টিকেলটি দারুনভাবে রচনা করা সম্ভব হবে। একবার যখন আপনি আপনার লেখার বিষয় সম্পর্কে খুবই স্পষ্ট হতে পারবেন, ঠিক তখনই আপনার আর্টিকেল লেখা শুরু করুন।
পাঠক শ্রেণি নির্ধারণ
আপনার লেখার প্রধান বিষয় বস্তুকে ঠিক করে এবার আপনার কাজ হচ্ছে, নির্ধারিত একটি পাঠক শ্রেণি ঠিক করা। আপনার পাঠকরা আপনার নিবন্ধ বা আর্টিকেল পড়ে আসলে কোন বিষয়গুলো জানবে সে বিষয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে। আপনার নিবন্ধ থেকে পাঠকরা ঠিক কিরকম তথ্য পাবে সে বিষয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে। আর এসকল ব্যাপার মাথায় রেখে আপনি আপনার নির্ধারিত পাঠক শ্রেণি ঠিক করুন। আর আপনার পাঠক শ্রেণি ঠিক করার পর ঠিক সেই অভিমুখে আপনার লেখার কাজ শুরু করুন।
লেখার পূর্বে পর্যাপ্ত গবেষণা
লেখার প্রধান টপিক এবং পাঠক শ্রেণি বাছাই করার পর এবার আপনার কাজ হচ্ছে লেখার আগে কিছু গবেষণা করে নেওয়া। আপনি আপনার বিষয়ের একই ধরনের আইডিয়া সম্পর্কিত আরো আর্টিকেল পড়ুন। আপনি আপনার লেখতে যাওয়া আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সম্পর্কিত আরো অনেক আর্টিকেল এবং বই পড়তে শুরু করুন। আর্টিকেল লেখা শুরু করবার আগে অবশ্যই আপনার বিষয়বস্তু নিয়ে আরো যে লেখা গুলো ইতিমদ্ধে প্রকাশিত সেসব নিয়ে ভালও করে গবেষণা করতে হবে। সেই সব গবেষণা থেকে প্রথমে আপনি যে চিন্তাধারা তৈরি করেছেন সেগুলোকে সাপোর্ট করে কিনা তা যাচাই করতে হবে। আপনি যদি আপনার লেখায় আপনার নিজের কোন মতামত তুলে ধরেন, অবশ্যই কোনো লেখক বা গবেষকের কথা বা লেখা থেকে সেই আলোকে উদ্ধৃতি দেবার চেষ্টা করবেন। উদ্ধৃতি না দিলেও নিজে থেকেই যাচাই করে নিবেন আপনার জানা তথ্যগুলো সত্য কিনা।
আপনার লেখার ধারাকে সুন্দর প্রবাহিত রাখতে আপনি অবশ্যই একটি মূল ফোকাস শব্দ বা কিওয়ার্ড বাছাই করবেন। একটি ফোকাস শব্দ বা কিওয়ার্ডে আর্টিকেলকে নির্দিষ্ট করার পাশাপাশি আপনার আর্টিকেলকে অনেকগুলো অংশে ভাগ করে নিতে পারেন। আর প্রতি ভাগে আপনার আর্টিকেলের মূল বিষয় সম্পর্কিত সহ-শিরোনাম ব্যবহার করতে পারেন। আর আপনি ঠিক কোন কোন তথ্যসূত্র থেকে আপনার আর্টিকেল লেখবার সময় সাহায্য নিয়েছেন, তা সংরক্ষণ করে রাখতে ভুল করবেননা। আর্টিকেলের শেষে আপনার ব্যবহৃত সকল তথ্যসূত্রগুলো যুক্ত করে দিবেন, এতে করে আপনার আর্টিকেল আরো বেশি সমৃদ্ধ ও বিশ্বস্ত হবে।
রূপরেখা এবং খসড়া তৈরি
বিভিন্ন গবেষণা এবং তথ্য অনুসন্ধান করবার পর এবার আপনি আপনার লেখার একটি মোটামটি খসড়া তৈরি করে নিন। আপনার লেখার একটি খসড়া এবং মনে মনে রূপরেখা আপনাকে দারুনভাবে আপনার আইডিয়াকে সুন্দর সাবলীল লেখনীতে প্রস্তুত করতে সহযোগিতা করবে। আপনার আর্টিকেলের ভেতর আপনি যে ধারনাগুলো সম্পর্কে পাঠককে জানাবেন সেগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট হন। আর সেই ধারনাগুলো যেন পাঠকের বুঝতে অনেক সুবিধা হয়, সেক্ষেত্রে লেখাটিকে কতটি অংশে ভাগ করবেন তা ভেবে রাখুন। আর এসব ভাবার সময় আপনার গ্রামার, বিরামচিহ্ন কিংবা বিশ্লেষণমূলক পয়েন্ট এগুলো নিয়ে না ভাবলেও হবে।
আপনার চিন্তাধারায় খুব বেশি মনোযোগ দিন। এই সময় ভেবে রাখবেন কেবল আপনার মাইন্ড এবং হাত কাজ করবে! আপনার চিন্তা ধারাকে আপনার হাতের মাধ্যমে দারুণ লেখনীতে পরিণত করতে শুরু করুন। আপনি ভাবুন আপনি আপনার সামনের মানুষকে এই বিষয়টি নিয়ে গল্প শোনাচ্ছেন, সেই হিসেবে আর্টিকেলটি লিখতে শুরু করুন। আপনার লেখাকে আরও সুনির্দিষ্ট করতে প্রতিটি জায়গায় আপনার ফোকাস ওয়ার্ড বা কিওয়ার্ডের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারেন। আপনি আপনার লেখাকে আরও তথ্যবহুল করতে বুলেট ব্যবহার করতে পারেন।
খসড়া সম্পাদনা
আপনি যদি ভেবে থাকেন আপনার মাইন্ডের সাথে দারুন এক সময় পার করে লেখার কাজটি সেস করেছেন, তবে দুশ্চিন্তার কিছু নেই! আপনি সত্যিই দারুন একটি কাজ করেছেন। এবার আপনাকে খসড়াকে ভালোভাবে সম্পাদনা করবার পালা। যাকে আমরা বলতে পারি ড্রাফট এডিট করার পালা। আপনি ড্রাফট তথা খসড়া সৃষ্টি করার সময় হয়ত গ্রামার বা বিরাম চিহ্নর দিক বেশি নজর দেননি। তবে খসড়া সম্পাদনার সময় আপনাকে এই বিষয়গুলোতে খুব ভালোভাবে নজর দিতে হবে। আপনি কম্পিউটারে আপনার বাংলা লেখাটির বানান কতটা শুদ্ধ নিশ্চিত হবার জন্য অভ্র স্পেল চেকার ব্যবহার করতে পারেন।
আপনার লেখাটি আপনি এসময় নিজে ২-৩ বার পড়ে নিন। আপনি নিশ্চিত হন যে, পাঠক যেন আপনার লেখা থেকে আগ্রহ হারিয়ে না ফেলে। আর সেজন্য সকল বিষয়বস্তু পর্যায়ক্রমে সঠিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে কিনা সেদিকে নিশ্চিত হন। আপনার আর্টিকেলটি ফোকাস ওয়ার্ড বা কিওয়ার্ড থেকে বিক্ষিপ্ত হয়ে যাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হন।
কয়েকবার পড়ুন
শেষ সম্পাদনার পরেও আরেকবার নিশ্চিত হন যে, আপনার কোন ভুল থেকে গেলো কিনা। আপনার সম্পাদনার দক্ষতা যতই ভালো হোক না কেন; মানুষ মাত্রই ভুল! তাই শেষে অন্তত একবার হলেও ভালো করে আপনার লেখাটি পড়ে নিন যে কোন ভুল থেকে গেল কিনা!
ভিজুয়াল বিষয়বস্তু যোগ করুন
আপনার লেখাটি অনলাইন মাধ্যমে প্রকাশিত হলে, বিভিন্ন ভিজুয়াল বিষয়বিস্তু সংযুক্ত করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার লেখার মাঝে কিছু ইনফোগ্রাফিক্স বা লেখার সাথে সম্পর্কিত ছবি পাঠককে পড়ার ফাঁকে কিছুটা বিরতি দেয়। আর এই সংজুক্তি যে কেবল পাঠককে বিরতি দিচ্ছে তা কিন্তু নয়, এটি পাঠককে আপনার লেখার সাথে আরো বেশি সংযুক্ত করছে। আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কে ওয়াকিবহল হয়ে থাকেন, তবে আপানার লেখার সাথে সম্পর্কিত এক বা একাধিক ইনফোগ্রাফিক্স যোগ করতে পারেন।
তবে আপনার আর্টিকেলকে পাঠকের কাছে আরো আকৃষ্ট করতে অবশ্যই একাধিক ছবি ব্যবহার করবার চেষ্টা করুন।
নিউজ আর্টিকেল
সংবাদ কিংবা তথ্য ছড়িয়ে দেবার জন্য বর্তমান সময়ে অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে অনলাইন সংবাদ পত্র। আর অনলাইন সংবাদ পত্রে মূলত নিউজ আর্টিকেল লিখবার মাধ্যমে তথ্য ছড়িয়ে দেয়া হয়। সুতরাং আর্টিকেল রাইটিং এ একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করে আমাদেরকে অবশ্যই নিউজ আর্টিকেল লিখতেও পারদর্শী হতে হবে।
নিউজ আর্টিকেল- উল্টো পিরামিড মডেল
নিউজ আর্টিকেল লিখবার ক্ষেত্রে সর্বদাই একটি উল্টো পিরামিড মডেল অনুসরণ করবেন। এখানে লক্ষ্য করলে দেখবেন, উল্টো পিরামিডের উপরে বড় করে লেখা গরম এবং নিচে ছোটো করে নরম। তার মানে হচ্ছে, নিউজ আর্টিকেলের উপরে সর্বদা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট বা ঘটনাগুলো উল্লেখ্য করবেন। এবং উপরে থেকে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলো আলোচনা করতে করতে নিচের দিকে এসে আর্টিকেলটিকে সামার-আপ তথা পরিপূর্ণ করবেন। কখনই নিউজ আর্টিকেলে শুরুতেই ঘটনা থেকে দূরে সরে এসে, ঘটনা থেকে অপ্রাসঙ্গিক বা প্রাসঙ্গিক আলাপ করবেননা। আর বড় বড় সকল সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টাররা তাদের লেখায় এই পিরামিড মডেলই অনুসরণ করেন।
নিউজ আর্টিকেল- সহজ শব্দ চয়ন
নিউজ আর্টিকেলে কখনই কঠিন শব্দ বা জটিল বাক্য ব্যবহার করবেন না। সহজ সাবলীল ভাষা এবং সহজ সহজ শব্দ বাছাই করে নিউজ আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করবেন। নিউজ আর্টিকেলে আপনি আপনার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিচ্ছেন না, এখানে আপনি মানুষকে কোন জরুরি ঘটনা না তথ্য জানাচ্ছেন। তাই এই নিউজ আর্টিকেলের ক্ষেত্রে সহজ শব্দ চয়নে মুখ্য গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।
নিউজ আর্টিকেল- সরল বাক্য গঠন
যেমনভাবে সহজ শব্দ গঠন করা নিউজ আর্টিকেলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তেমনিভাবে সরম বাক্য গঠন করাও গুরুত্বপূর্ণ। ইংরেজিতে যেমন নিউজ আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে সিম্পল সেন্টেন্সে লেখাটি সম্পন্ন করা হয়, তেমনি বাংলায় লেখার ক্ষেত্রে আর্টিকেলটি সরল বাক্যে গঠন করবেন।
নিউজ আর্টিকেল- বাক্যের দৈর্ঘ্য
নিউজ আর্টিকেলটিতে কোন জায়গায় বাক্যগুলো বেশি দীর্ঘ করবেন না। সবসময়ে ৯-১২ শব্দের ভেতর বাক্যটি রাখলে সেটি সবচেয়ে ভালো হয়। আর বিরাম চিহ্নের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করুন। আর এই বিষয়ে আপনাকে ব্যাকরণের বিরাম চিহ্ন বিষয়ক সম্যক ধারনা থাকা জরুরি।
প্রেস রিলিজ
আর্টিকেল রাইটিং এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগ হচ্ছে প্রেস রিলিজ বা প্রেস বিজ্ঞপ্তি লেখা। একটি ব্র্যান্ড কিংবা প্রতিষ্ঠান প্রেস রিলিজের মাধ্যমে ভার্চুয়াল জগতে তাদের নতুন কোন ঘোষণা কিংবা বিবৃতি প্রকাশ করে থাকে। প্রেস রিলিজ তথা পিআর এর মাধ্যমে ব্র্যান্ড কিংবা প্রতিষ্ঠান নাগরিকের সাথে তাদের সম্পর্ক গড়ে তোলে। কোম্পানিরা তাদের ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্যেও প্রেস রিলিজ ব্যবহার করে থাকে। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করেন তখনও আপনার প্রেস রিলিজ নিয়ে খুব স্পষ্ট ধারনা থাকতে হবে।
প্রেস রিলিজ- স্পষ্ট শিরোনাম
প্রেস রিলিজে আপনার আর্টিকেলের শিরোনামের ক্ষেত্রে আপনাকে খুবই যত্নশীল হতে হবে। শিরোনাম হতে হবে খুবই সাবলীল। শিরোনামের টেক্সট ক্যারেক্টার ৩৫ থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। তবে মাথায় রাখবেন, আপনার শিরোনামটি যেন আপনার পুরো প্রেস রিলিজকে প্রতিনিধিত্ব করে!
প্রেস রিলিজ- শিরোনামে প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ্য করুন
প্রেস রিলিজের ক্ষেত্রে শিরোনামের ভিতর অবশ্যই ব্র্যান্ড কিংবা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ্য করবেন। এটা যে কেবল ব্র্যান্ডের নাম র্যাঙ্ক করতে সাহায্য করে তা নয়, এই থেকে সেই প্রতিষ্ঠানটির রেপুটেশনও বৃদ্ধি পায়।
প্রেস রিলিজ- দৈর্ঘ্য পর্যবেক্ষণ করুন
প্রেস রিলিজকে সর্বদাই একটি নিউজ আর্টিকেল হিসেবে ভেবে নিবেন। আর আপনার লেখার দৈর্ঘ্য বেশি বড় করবেননা। প্রেস রিলিজের ক্ষেত্রে সাধারণত লেখাটি ৭০০ ক্যারেক্টারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। প্রেস রিলিজে বিষয়বস্তু হবে খুবই স্পষ্ট! যেমন, কে, কি, কোথায়, কখন, কেন। প্রেস রিলিজে লেখার ইতিহাস, রেকর্ড এবং পরিসংখ্যান হবে খুবই স্পষ্ট।
প্রেস রিলিজ- কি-ওয়ার্ড যোগ করুন
প্রেস রিলিজে কি-ওয়ার্ড যোগ করা অনলাইনে সেই প্রেস রিলিজকে আরও বেশি কার্যকর করে তোলে। লেখার মধ্যে ফোকাস ওয়ার্ড কিংবা কিওয়ার্ডের ব্যবহার সেই লেখাকে অনলাইনে খুঁজে পেতে আরও বেশি সহযোগিতা করে। প্রেস রিলিজের ক্ষেত্রে আপনি এক বা একাধিক কি-ওয়ার্ড বাছাই করতে পারেন। আর সেই কি-ওয়ার্ডগুলো আপনি প্রেস রিলিজ লেখার সময় বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিন। আপনি আপনার প্রেস রিলিজের শিরোনাম, সূচনা এবং শেষ প্যারায় কি-ওয়ার্ডটি যুক্ত করে দিন।
প্রেস রিলিজ- লোগো ব্যবহার করুন
প্রেস রিলিজে লেখার সাথে ভিজুয়াল গ্রাফিক্স হিসেবে অবশ্যই ব্র্যান্ড কিংবা প্রতিষ্ঠানের লোগো ব্যবহার করুন। প্রেস রিলিজে লোগো ব্যবহার যেমন অনলাইন প্রকাশনার ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিনে সেই প্রেস রিলিজকে সমৃদ্ধ করবে; তেমনি অনলাইন বা অফলাইনেও পাঠকের কাছে সেই প্রেস রিলিজ আরো বেশি বিশ্বস্ত হবে।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন- অন পেজ এসইও
আপনি আমাদের এই আর্টিকেল রাইটিং কোর্সটি করছেন, এর মানে আপনার অন্যতম একটি উদ্দেশ্য অনলাইনে ভালোমানের আর্টিকেল লিখে প্রকাশ করা। আর অনলাইনে আর্টিকেল রাইটিং এ দক্ষ হতে আপনাকে সার্চ ইঞ্জিনঅপটিমাইজেশন সম্পর্কে জানতেই হবে। কেননা মানুষ যেকোনো কিছু জানতে আগে গুগল এর মতো বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে সেই লেখা সার্চ করে অনুসন্ধান করে। তো আপনার লেখা যদি গুগল এর মতো সার্চ ইঞ্জিনে লিখে সবার উপরে আসে, ঠিক তখনই কিন্তু আপনার সার্থকতা! মূলত আপনার লেখাকে এমনভাবে গঠিত করা, যেন সেটি সার্চ ইঞ্জিনে সবার উপরে আসে, সেটিকেই বলা হচ্ছে আর্টিকেল রাইটিং এর সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। মূলত আর্টিকেল রাইটিং এর ক্ষেত্রে আমরা এসইও তথা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর অন-পেজ এসইও নিয়ে বেশি জানব।
অন পেজ এসইও- আর্টিকেল কিওয়ার্ড
ফোকাস ওয়ার্ড বা কিওয়ার্ড আর্টিকেলের বা নিবন্ধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। আপনি যদি ইন্টারনেটে আপনার কোন লেখা প্রকাশ করেন এবং সেখানে যদি কোন কিওয়ার্ড না থাকে, তবে কেউ আপনার লেখাই খুঁজে পাবেনা। আর আপনার লেখা যদি খুঁজে না পায়, তবে আপনার লেখার সার্থকতা কি থাকল! আর সেই কারনে সর্বপ্রথম আমাদের মাথায় কিওয়ার্ড ঠিক করে নিতে হবে। অতঃপর সেই কিওয়ার্ডের উপর ভিত্তি করে সম্পূর্ণ আর্টিকেল লিখতে হবে। ধরুন আপনি একটি আর্টিকেল বা নিবন্ধ লিখবেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ক তথ্যাদি! তখন আপনার কিওয়ার্ড হতে পারে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি’। আর ঠিক এই কিওয়ার্ডকে আপনাকে আপনার লেখার মধ্যে বহুবার পুনরাবৃত্তি করতে হবে।
অন পেজ এসইও- আর্টিকেল শিরোনাম
একটি আর্টিকেল না নিবন্ধকে গুগল বা অন্য যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে ভালো করতে হলে অবশ্যই সার্চ ইঞ্জিন বান্ধব শিরোনাম ব্যবহার করতে হবে। আপনার লেখার যে ফোকাস ওয়ার্ড বা কিওয়ার্ড তাকে অবশ্যই আর্টিকেলের উপরের প্যারাগ্রাফ বা প্রথম ৬৫ ক্যারেক্টারের মধ্যে ১-২ বার অন্তর্ভুক্ত করবেন। আপনার শিরোনামকে খুব বেশি দীর্ঘ করবেননা! আর আর্টিকেলের প্রথম প্যারাগ্রাফের ২য় বা ৩য় লাইনেই আপনার শিরোনামকে একটু বিস্তৃত করার চেষ্টা করবেন। এতে করে সার্চ ইঞ্জিনের আপনার আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বুঝতে সুবিধা হবে।
অন পেজ এসইও- আর্টিকেল অপটিমাইজেশন
সার্চ কোন লেখা সার্চ রেজাল্টে আসলে কেবল তার প্রথম ২-৩ লাইন কিন্তু সেখানে ডিসপ্লে হয়। সুতরাং, আপনার লেখার প্রথম ১-২-৩ লাইনে যে আপনার কিওয়ার্ড ভালভাবে থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে আপনাকে। আর প্রথম ১-২ লাইনেও যেন আপনার সম্পূর্ণ লেখা সম্পর্কে হালকা সামারি থাকে সেটা নিশ্চিত করবেন। অতঃপর সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আপনাকে সেই কিওয়ার্ড আরো বহুবার পুনরাবৃত্তি করতে হবে। আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে সেই কিওয়ার্ড বিভিন্ন প্যারায় ৩-৬ বারের মতন পুনরাবৃত্তি করতে পারেন।
অন পেজ এসইও – কিওয়ার্ড পুনরাবৃত্তি
কিওয়ার্ড যে কেবল একটি সিঙ্গেল ওয়ার্ড হবে তা কিন্তু বলা হয়নি, কিওয়ার্ড হতে পারে phrase বা বাক্যাংশ! যেমন, একটি আর্টিকেলের শিরোনাম যদি হয়ঃ হেডফোন গাইডঃ ভালো হেডফোন কিনতে যা যা জানা জরুরি। তবে এখানে কিওয়ার্ড হতে পারে ভালো হেডফোন বা হেডফোন গাইড। তবে আপনি এক বা একাধিক কিওয়ার্ড ব্যবহার করেন না কেন, মাথায় রাখবেন, আপনার কিওয়ার্ড যেন সঠিকভাবে আপনার লেখা জুড়ে বিরাজমান থাকে।
- সর্বদা চেষ্টা করবেন, শিরনামেও যেন কিওয়ার্ড বিদ্যমান থাকে।
- কিওয়ার্ড শিরোনামে থাকুক, কিংবা আর্টিকেলের বডিতে, মাথায় রাখবেন সেগুলো দেখে যেন অবাস্তব মনে না হয়। যেন মনে হয় কিওয়ার্ড গুলো লেখার সম্পূর্ণ বাক্যের সাথে মিশে ভালোভাবে ভাব প্রকাশ করছে বা অর্থ প্রকাশ করছে।
- কোন কিওয়ার্ড আসলে কতটা ট্রেন্ডি কিংবা মানুষ কতটা সার্চ করছে, সেগুলো আপনি বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলসের মাধ্যমে জানতে পারবেন।
- বাংলা আর্টিকেল লিখবার জন্য আপনি কিওয়ার্ডস ডট আইও ওয়েবসাইট থেকে ফ্রি কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে পারবেন।
- আর্টিকেলে একটি কিওয়ার্ড খুব বেশি জায়গায় দিবে না। একটি কিওয়ার্ড সর্বোচ্চ ৬ বার ব্যবহার করতে পারবেন, তাও যেন সেটি আরটিকেলে যথেষ্ট স্বাভাবিক মনে হয়, কৃত্রিম মনে না হয়!
- অস্বাভাবিকভাবে বাক্যের ভাবের সাথে কোন মিল না রেখেই, কেবল কিওয়ার্ড দিয়ে গেলে তা সার্চ ইঞ্জিন আন-ইন্ডেক্সও করে দিতে পারে। আর এতে করে আপনার লেখা গুগল এর মতো প্লাটফর্ম থেকে গায়েব হয়ে যাবে।
অন পেজ এসইও – আর্টিকেলের দৈর্ঘ্য
সার্চ ইঞ্জিন একটি আর্টিকেল বা নিবন্ধকে কখন ভালো বলবে? যখন সেই আর্টিকেল বা নিবন্ধে অনেক বেশি তথ্য থাকবে। আর বুঝতেই পারছেন, সে হিসেবে আমরা কি বলতে চাচ্ছি। কেবল প্রেস রিলিজ ব্যাতিত অন্যসকল ধরনের লেখায় আর্টিকেলের লেন্থ তথা দৈর্ঘ্য বড় হওয়া একান্ত জরুরি। একটি মানসম্মত লেখা লিখতে হলে আপনাকে মিনিমাম ১০০০ শব্দে সেই লেখাটি সম্পন্ন করা উচিত। আপনি একটি লেখা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এবং সেই লেখা সম্পর্কে সার্চ ইঞ্জিন কেও ভালোধারনা দিতে সেটি বড় হওয়া প্রয়োজন। তবে অবশ্যই মাথায় রাখেবন, বড় করতে ভুলভাল তথ্য দিয়ে নয়, পর্যাপ্ত তথ্য দিয়েই আর্টিকেলটি দীর্ঘ করতে হবে।
অন পেজ এসইও -মৌলিকতা
লেখার মৌলিকতা অবশ্যই বজায় রাখুন। কখনই কারো লেখা নকল কিংবা কপি করবেন না। আর আপনার লেখায় বই বা তথ্যসূত্রের উদ্ধৃতি দেয়া থাকলে অবশ্যই সেই তথ্যসূত্র, বই বা লেখকের নাম উল্লেখ করুন।
You're reading eProjonmo, the versatile technology news portal of bd.