আমাদের সৌরজগতের চতুর্থ এবং আমাদের পৃথিবীর সবচাইতে কাছের গ্রহটির নাম হচ্ছে মঙ্গল। আমরা ইপ্রজন্ম ডট কমের বিজ্ঞান বিভাগের এই লেখায় জানব মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে ২০টি দারুন তথ্য।
- মঙ্গল লাল গ্রহ নামেও পরিচিত, একে বলা হয় রেড প্লানেট। গ্রহটি আয়রন অক্সাইডের মাটি, ধুলা এবং পাথর দিয়ে গঠিত। আইরন অক্সাইড দিয়ে তৈরি বলে মঙ্গল গ্রহকে দেখতে লাল দেখায়। আর লাল দেখায় বলে একে বলা হয় রেড প্লানেট।
- মঙ্গল গ্রহের ইংরেজি নাম হচ্ছে Mars। আর এই Mars নামটি এসেছে রোমান যুদ্ধের দেবতার থেকে। রোমানরা মঙ্গল গ্রহকে যুদ্ধের দেবতার প্রতীক হিসেবে মানত।
- মঙ্গল গ্রহের দুটো উপগ্রহ রয়েছে, এগুলোর নাম হচ্ছেঃ ডাইমোস এবং ফোবোস। আর এই নামটিও রোমান যুদ্ধের দেবতার নিজস্ব দুটো ঘোড়ার নাম থেকে নেয়া হয়েছে।
- মঙ্গল অবস্থানের দিক দিয়ে সূর্য থেকে চতুর্থ দূরবর্তী গ্রহ। মঙ্গল গ্রহের আয়তন ২২৭,৯৩৬,৬৩৭ বর্গ কিলোমিটার। পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে চাঁদে যাওয়ার গতিতে গেলে প্রায় ৩০০ দিন তথা ৮ মাস সময় লাগবে।
- মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীর ব্যবধানে ৪২১৭ বর্গমাইল ছোট, যার মাধ্যমে এটি সৌরজগতের দ্বিতীয় ছোট গ্রহ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
- মঙ্গল গ্রহে একদিন সমান পৃথিবীর ২৪ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট।
- মঙ্গল গ্রহে এক বছর সমান ৬৮৭ দিন। অর্থাৎ পৃথিবীর হিসেবে মঙ্গলে এক বছর মানে ১ দশমিক ৯ বছর বা প্রায় ২ বছরের সমান। মূলত সূর্য থেকে অনেক দূরে হবার কারনে মঙ্গলে বছর অনেক দেরীতে পূরণ হয়।
- মঙ্গল গ্রহ তার অক্ষের উপর ২৫ ডিগ্রি কাত হয়ে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। এই কারনে পৃথিবীর মতই মঙ্গলে ঠিক একইরকম ঋতুকাল বিরাজ করে।
- মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডলে ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশ কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং ২ দশমিক ৭ শতাংশ নাইট্রোজেন। মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল খুবই পাতলা বলে এটি সূর্যের তাপকে ধরে রাখতে পারেনা। এই কারনে মঙ্গল গ্রহের তাপমাত্রা খুবই ঠান্ডা।
- মঙ্গল গ্রহের মধ্যাকর্ষণ শক্তি খুবই কম। মঙ্গল গ্রহের মধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর চাইতে ৩৭ শতাংশ দুর্বল। আপনি যদি মঙ্গলের মাটিতে পা রেখে উপরের দিকে লাফ দেন আপনি পৃথিবীতে লাফ দিলে যা উপরে উঠতেন তার চাইতে ৩ গুণ উপরে উঠবেন।
- মঙ্গল গ্রহ একটি পাথুরে গ্রহ, গ্রহটি খুবই শক্ত মাটি এবং পাথর দিয়ে গঠিত। মঙ্গল গ্রহের উত্তর অংশ সম্পূর্ণ সমান আর দক্ষিন অংশ পাহাড়ের মতন খাদে পরিপূর্ণ।
- মঙ্গলের পৃষ্ঠে পানির প্রবাহ বয়ে যাওয়ার মতন ক্যানালের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। যা দেখে মনে হয় এখানে হয়ত আগে পানি বয়ে যেত। এই থেকে ধারণা করা হয় যে, হয়ত কোটি বছর আগে এখানে পানির অস্তিত্ব ছিল।
- সূর্যের কারনে মঙ্গল গ্রহে প্রচণ্ড পরিমানে ধুলা ঝড় হয়ে থাকে। আর উৎপন্ন এসব ধুলাঝড় কয়েকমাস পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।
- মঙ্গলগ্রহে আমাদের সৌরজগতের সবচাইতে বড় আগ্নেয়গিরির অবস্থান রয়েছে। এই আগ্নেয়গিরির মুখটি প্রায় ১৬ মাইল উচু, আর ভেতর থেকে এটি প্রায় ৬০০ কিলোমিটার গভীর।
- মঙ্গল গ্রহের সবচাইতে বড় গর্তের নাম হচ্ছে বরেলিস বেসিন। যেই গর্তের একমাথা থেকে আরেক মাথার দূরত্ব ৫৩০০ মাইল।
- মঙ্গল গ্রহে আমাদের সৌরজগতের সবচাইতে বড় গিরিখাতেরও অবস্থান! এই গিরিখাতের নাম ভ্যালেস মেরিনেরিস। ভ্যালেস মেরিনেরিসের গভীরতা৪ মাইল, আর এটি শত মাইলেরও বেশি দূরত্ব জুড়ে বিস্তৃত।
- মঙ্গল গ্রহেও আমাদের পৃথিবীর মতন দুই মেরু অঞ্চল রয়েছে। আর এই মেরু অঞ্চলগুলো কার্বন ডাইঅক্সাইডের বরফ রূপ দ্বারা আবৃত।
- মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীর সবচাইতে কাছের গ্রহ। পৃথিবী থেকে যদি মানুষ প্রথম কোন গ্রহে পা রাখে, তবে সেটি মঙ্গল গ্রহতেই রাখবে।
- মঙ্গল গ্রহে পৃথিবী থেকে অনেক রোভার তথা রোবট গিয়েছে। এসকল মঙ্গল গ্রহ থেকে নানান রকম স্যাম্পল কালেক্ট করে যেগুলো দিয়ে বিজ্ঞানীরা মঙ্গল নিয়ে গবেষণা করছেন।
- মঙ্গল গ্রহে এখন পর্যন্ত কোন প্রানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে এটিই একমাত্র গ্রহ যেখানে প্রানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা মঙ্গলের সারফেসের নিচে পানির বরফের মত বস্তুরও সন্ধান পেয়েছেন।
You're reading eProjonmo, the versatile technology news portal of bd.
“পৃথিবীর সবচাইতে কাছের গ্রহটির নাম হচ্ছে মঙ্গল”- উমম, নাহ! গড় দূরত্বে সবচেয়ে কাছের গ্রহ বুধ, আর কক্ষপথের দূরত্বে শুক্র