স্টার্টআপ কি? স্টার্টআপ বলতে কি বুঝায়? স্টার্টআপ যত প্রকার

কোন কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা থেকে নিজের কোন বিজনেস আইডিয়া থেকে কিছু শুরু করাকেই বলা যেতে পারে স্টার্টআপ। প্রতিটি স্টার্টআপের সহজ বাংলা ভাষায় উদ্যোগেরপ্রতিষ্ঠাতাকে বলা হয় একেকজন উদ্যোক্তা। উদ্যোক্তাকে ইংরেজিতে বলা হয় ইন্টারপ্রেনিওর। আর এই ইন্টারপ্রেনিওর তথা ইন্টারপ্রেনিওরশিপ শব্দটির সাথে বর্তমান সময়ে আমরা অনেক বেশি পরিচিত।

একটি স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা কিংবা উদ্যোক্তা তার দেখা স্বপ্ন থেকে নতুন কোন একটি কিছু সমাজকে উপহার দেয়, যা ইতিপূর্বে ছিলনা কিংবা কেউ করেনি। স্টার্টআপ যে এমন হতে হবে কেউ আগে কখনো করেনি, এমনো কিন্তু নয়! স্টার্টআপ গুলো এমনও হতে পারে যে, সেই কনসেপ্টগুলো ইতিপূর্বেও ছিল, তবে সেটিকে নতুন ধাচে ভিন্ন কোন উপায়ে শুরু করা হয়েছে।

সিএসই’তে পড়ে বেকার থাকে কেন?

উন্নত বিশ্বে এমন অনেক উদাহরন রয়েছে যে, কোন স্টার্টআপ খুব অল্প সময়ে ডেভেলপ হয়ে সেটি একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতেও রূপান্তরিত হয়েছে। ফেসবুক যখন মার্ক জাকারবার্গ শুরু করেছিলেন, তখন কিন্তু তিনি ভাবেননি ফেসবুক এত বড় পরিমানে সম্প্রসারিত হবে! তবে আজ আমরা দেখছি যে, মার্ক জাকারবার্গ এই স্টার্টআপ পৃথিবীর অন্যতম বড় আইটি কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। আর ফেসবুক (বর্তমান মেটা) হয়ে গিয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট।

স্টার্টআপ বলতে কি বুঝায়

স্টার্টআপ হচ্ছে নতুন কিংবা ছোট কোন প্রতিষ্ঠান যেটি কাস্টমারদের জন্য ইউনিক কিছু প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস নিয়ে আসে। স্টার্টআপ সবসময় তার কাস্টমারদের জন্য এমন কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে আসার চেষ্টা করে,যেন কাস্টমার কিছুটা হলেও নতুন অভিজ্ঞতার সাথে পরিচিত হয় এবং লাভবান হয়।

  • স্টার্টআপ হচ্ছে মূলত শুরুর পর্যায়ের একেকটি ব্যবসা।
  • একজন স্টার্টআপের উদ্যোক্তা তার স্টার্টআপের বিনিয়োগ শুরুর দিকে নিজে থেকেই করেন এবং বড় কোন বিনিয়োগকারিদের তাদের স্টার্টআপের পিছে বিনিয়োগ করবার জন্য আকৃষ্ট করতে থাকেন।
  • স্টার্টআপ বহুভাবে বিনিয়োগ পেয়ে থাকে। বন্ধু-পরিবার, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি, ক্রাউডফান্ডিং এমনকি লোন নেয়া থেকে একটি স্টার্টআপ তার কার্যক্রম শুরু করে।
  • অন্য সাধারণ ব্যবসার মত, স্টার্টআপেরও বিজনেস মডেল এবং আইনি কাঠামো থাকে।
  • স্টার্টআপে অনেক বড় একটি রিস্ক থাকে ফেইল হবার।
  • স্টার্টআপে ফেইল হবার ভয় থাকলেও, স্টার্টআপ শেখার, উদ্ভাবন করার, স্বাধীনভাবে কাজ করার, অতি অল্প সময়ে লাভবান হওয়ার অনেক সম্ভাবনা থাকে।

স্টার্টআপের সাথে উদ্ভাবনের অনেক সুন্দর মিলবন্ধন রয়েছে। কেননা স্টার্টআপ সবসময় চেষ্টা করে ইতিমধ্যেই যে পণ্য বা সেবা বাজারে রয়েছে তাকে নতুন রূপে কাস্টমারদের মাঝে নিয়ে আসার। যেন কাস্টমারও সেই পণ্যটি ইতিমধ্যে অন্য কোন উপায়ে গ্রহন করে যেমন উপকৃত হচ্ছিল, নতুন একটি স্টার্টআপ থেকে সেই একই পণ্য নিয়ে যেন সে একই বা আরো বেশি উপকৃত পাশাপাশি লাভবান হয়!

কোন স্টার্টআপকে অনেক সময় সেই স্টার্টআপ যেই ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কাজ করছে, সেই ইন্ডাস্ট্রির ‘ডিসরাপ্টরস’ বলা হয়। কেননা একটি স্টার্টআপ যে ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কাজ করে, সেটি ওই ইন্ডাস্ট্রিতে ইতিমধ্যে টিকে থাকা অন্যসব কোম্পানি কিংবা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাহক কিংবা কাস্টমারদের সার্ভিস দেবার দিক থেকে পুরোপুরি ভিন্নভাবে কাজ করে! যেহেতু স্টার্টআপ মূলত কাস্টমারদের সার্ভিস দেবার বিষয়টি মূল প্রাধান্য দিয়ে, নিজেদের ব্যবসায়িক আয়ের দিকটিকে কম গুরুত্ব দেয়! তাই কাস্টমাররা তাদের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে অনেকসময় একটি স্টার্টআপকেই বেশি প্রাধান্য প্রদান করে। আর এই কারনে স্টার্টআপকে বলা হয় ইন্ডাস্ট্রির ‘ডিসরাপ্টরস’।

সিএসই শিক্ষার্থীদের পতনের কারণ

স্টার্টআপ কত প্রকার?

স্টার্টআপ মূলত ৬ প্রকার। এগুলো হচ্ছেঃ স্কেলেবল স্টার্টআপ, ছোট বিজনেস স্টার্টআপ, লাইফস্টাইল স্টার্টআপ, বিক্রয়যোগ্য স্টার্টআপ, বড় বিজনেস স্টার্টআপ এবং সামাজিক স্টার্টআপ।

আধুনিক বিশ্বে যেখানে সবাই নিজে থেকে কোন উদ্ভাবন আনার চেষ্টা করে, সেখানে কেবল একটি দারুন আইডিয়া থেকেই দারুন একটি স্টার্টআপ শুরু করে দেয়া সম্ভব নয়। নিজের কোন স্টার্টআপ শুরু করতে হলে, আপনাকে অবশ্যই স্টার্টআপের ধরনগুলো সম্পর্কে আইডিয়া রাখতে হবে। মূলত স্টার্টআপ ৬ ধরনের হয়ে থাকে। আমাদের এই ৬ ধরনের স্টার্টআপ সম্পর্কে একদম স্পষ্ট ধারনা রাখতে হবে।

স্কেলেবল স্টার্টআপ

প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা স্টার্টআপ গুলো অনেকাংশে এই স্টার্টআপ ক্যাটেগরির মধ্যে পরে থাকে। যেহেতু বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো মার্কেটে অনেক বেশি গুরুত্ব রাখে, তাই এই প্রজাতির স্টার্টআপ গুলো খুব সহজেই গ্লোবাল মার্কেটে নিজেদের দূরত্ব বাড়িয়ে নিতে পারে। প্রযুক্তি স্টার্টআপ গুলো খুবই সহজে গ্লোবাল বিনিয়োগকারিদের থেকে বিনিয়োগ লাভ করে নিজেদেরকে ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তুলতে পারে।

উদাহরন হিসেবে আমরা একসময়কার সফল স্টার্টআপ এবং আজকের দিনের বড় বড় কিছু প্রযুক্তি কোম্পানির নাম তুলে ধরতে পারি। যেমনঃ গুগল, ফেসবুক, উবার, টুইটার ইত্যাদি। এই কোম্পানি গুলো যেমনভাবে নিজেদের জন্য সেরা কর্মকর্তা খুঁজে নিতে পারে, তেমনি ভাবে নিজেদের কার্যক্রমকে বাড়াতে খুবি সহজে বড় বড় ইনভেস্টরদের থেকে বিনিয়োগ পেতে পারে। এই জন্য প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা স্টার্টআপ গুলো বলা হয় স্কেলেবল স্টার্টআপ।

ছোট বিজনেস স্টার্টআপ

সাধারণ মানুষরা নিজেদের বিনিয়োগে যে ছোট ছোট ব্যবসাগুলো প্রতিষ্ঠিত করে এগুলোকে বলা হয় ছোট বিজনেস স্টার্টআপ। এসব স্টার্টআপ গুলো আস্তে আস্তে একটা ভালো পর্যায়ে চলে আসে। অনেক ক্ষেত্রে এই রকম স্টার্টআপের সুন্দর একটি ওয়েবসাইট থাকলেও, নিজেদের কোন অ্যাপ থাকেনা। দৈনন্দিন তৈজসপত্রের দোকান, অনলাইন স্টোর, ফেসবুকে বিভিন্ন অনলাইন স্টোর এই ক্যাটেগরির স্টার্টআপের মধ্যে পরে।

লাইফস্টাইল স্টার্টআপ

অনেক মানুষ তাদের দক্ষতা এবং শখের বিষয়গুলোকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন স্টার্টআপ গড়ে তোলে, এগুলোকে বলা যায় লাইফস্টাইল স্টার্টআপ। যেমন আপনি খুবি ভালো সাতার জানেন, আপনি আপনার এলাকায় একটি সাতার শেখার স্কুল খুললেন, এতে করে অনেকে আপনার থেকে সাতার শিখতে শুরু করল! এই আপনার একটি উদ্যোগ বা স্টার্টআপ একে বলা হয় লাইফস্টাইল স্টার্টআপ। নিজের ব্যক্তিগতও টিউশনি কিংবা প্রাইভেট কোচিং ব্যবসাও এই ক্যাটেগরির স্টার্টআপের মধ্যে পরে থাকে। উদাহরন হিসেবে আপনি একটি বাসায় ৪ জন স্টুডেন্টকে পড়াচ্ছেন, তাহলে আপনিও একটি স্টার্টআপ পরিচালনা করছেন, আর এই স্টার্টআপকে বলা যায় লাইফস্টাইল স্টার্টআপ।

বিক্রয়যোগ্য স্টার্টআপ

প্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকে আছেন যারা একটি স্টার্টআপ কে একদম শুরু করে তৈরি করে পরবর্তীতে তা গুগল, ফেসবুকের মতন বড় কোম্পানির কাছে বিক্রয় করে দেন। আর এইরকম স্টার্টআপকে বলা হয় বিক্রয়যোগ্য স্টার্টআপ। যারা এমন স্টার্টআপ তৈরি করেন, তাদের উদ্দেশ্যই থাকে তাদের স্টার্টআপটিকে তারা বিক্রি করে দিবেন।

বড় বিজনেস স্টার্টআপ

বড় বড় কোম্পানি যারা মার্কেটে ইতিমধ্যে অনেক শক্তপক্ত একটি অবস্থানে রয়েছে, তারা কাস্টমারদের নতুন কোন পণ্য কিংবা অভিজ্ঞতা দেবার জন্য, নিজেরাই একটি স্টার্টআপ তৈরি করে। যেমন শাওমি তাদের নিজেদের অধিনে পোকো নামে একটি কোম্পানি খুলে তার অধিনে পোকো স্মার্টফোন নিয়ে আসছে। এরকম বড় বিজনেস স্টার্টআপকে অনেক সময় বড় কোম্পানিদের একেকটি মার্কেটিং স্টান্টও বলা হয়।

সামাজিক স্টার্টআপ

এই স্টার্টআপ গুলোর ধরন অনেকতা ভিন্ন। ৬টি স্টার্টআপ ধরনের মধ্যে সবগুলো স্টার্টআপের একটি সাধারণ উদ্দেশ্য থাকে যে, মুনাফা লাভ করা! তবে সামাজিক স্টার্টআপের এই উদ্দেশ্যটি থাকেনা। বরং এই স্টার্টআপ গুলো তৈরি করা হয়, মানুষের সেবার করবার জন্য। এলাকায় এলাকায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন সামাজিক সহযোগী সংস্থা এই তালিকার মধ্যে পরে। যেমন বাংলাদেশে অনেক জনপ্রিয় একটি সামাজিক সংগঠন ‘এক টাকার আহার’ এরকম সামাজিক স্টার্টআপের মধ্যে পরে।

স্টার্টআপ কিভাবে কাজ করে?

স্টার্টআপ কিভাবে কাজ করে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে; সহজভাবে উত্তর দেয়া যায় যে, একটি কোম্পানি যেভাবে কাজ করে, একটি স্টার্টআপ ঠিক একইভাবে কাজ করে। স্টার্টআপে কিছু মানুষের গ্রুপ কাজ করে, তারা একসাথে কাজ করে কোন একটি প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস ডেভেলপ করে যেটি মানুষ কিনবে। আর স্টার্টআপকে অন্য সাধারণ ব্যবসার থেকে আলাদা করা যায় এই কাজের ধরনের মাধ্যমে।

রেগুলার বিজনেস কিংবা কোম্পানিগুলো তারা পূর্বে যা কাজটি করেছে, তারা সেই কাজটিকেও পুনরাবৃত্তি করে। যেমন বাইরের দেশে কি হয়? একটি রেস্টুরেন্ট মালিক অন্য একটি রেস্টুরেন্টের ফ্রাঞ্চাইজি কিনে নেয়। এভাবে তারা অন্য একটি টেমপ্লেটের হয়ে কাজ করে, আর সচরাচর ব্যবসা এইভাবেই কাজ করে। তবে একটি স্টার্টআপ সম্পূর্ণ ভাবে নতুন টেমপ্লেট কিংবা থিম তৈরি করে তাদের কাজ করে। উদাহরন হিসেবে বলা যায়, অন্য সাধারণ ব্যবসা কি করছে, অন্য কারো থেকে পণ্য নিয়ে এসে তাদের নামেই একটু মুনাফার বদলে সেই পণ্যটি বিক্রি করে দিচ্ছে। অন্যদিকে আপনি আপনার স্টার্টআপে একই পণ্য অল্প পরিসরে হলেও, নিজে তৈরি করে বিক্রি করছেন। এতে করে আপনি যেমন কম দামে আপনার গ্রাহককে ভালো পণ্য কিংবা সেবা তুলে দিতে পাচ্ছেন, তেমনিভাবে আপনার দারুন একটি বিশ্বাসযোগ্যতাও তৈরি হচ্ছে।

আরেকটি বিষয় যেটি স্টার্টআপকে অন্য সকল ব্যবসার থেকে আলাদা করে, সেটি হচ্ছে স্টার্টআপের স্পীড এবং গ্রোথ। স্টার্টআপ খুবি দ্রুততার সাথে নতুন কোন আইডিয়া নিজেদের স্টার্টআপে প্রয়োগ করে নিতে পারে। স্টার্টআপ ক্রমাগত নিজেদের পণ্যের উন্নয়ন করতে পারে তাদের কাস্টমারদের মতামত এবং পরামর্শের সাহায্যে। কোন স্টার্টআপ যখন তাদের নতুন কোন পণ্য তৈরি করে, তখন তারা সেটির একটি বেসিক রূপ প্রস্তুত করে, আর এই বেসিক রূপকে বলে মিনিমাল ভায়াবল প্রোডাক্ট বা এমভিপি। আর স্টার্টআপের এই এমভিপি ক্রমাগত কাস্টমারদের দ্বারা টেস্ট এবং ফিডব্যাক পাবার মাধ্যমে স্টার্টআপ সেটির একটি ফাইনাল ভার্সন প্রস্তুত করে।

নিজেদের পণ্য কিংবা সার্ভিসকে উন্নয়নের পাশাপাশি একটি স্টার্টআপ খুবি দ্রুততার সাথে তাদের কাস্টমার বেজকেও বড় করতে শুরু করে। আর এই কারনে স্টার্টআপ খুবি দ্রুত সময়ে একটি বড় মার্কেট শেয়ার ধরে নিতে পারে, যা একটি নতুন এবং ছোট কোম্পানির ক্ষেত্রে ধরা খুবি কষ্টকর হয়ে যায়।

স্টার্টআপ যেমন অনেক বেশি সম্ভাবনার দাড় উন্মোচন করে তেমনি ভাবে স্টার্টআপ অনেক বেশি চ্যালেঞ্জও বয়ে নিয়ে আসে। চলুন, স্টার্টআপে কাজ করার কয়েকটি সুবিধা নিয়ে আলোচনা করি।

ফ্লেক্সিবল সিডিউল

অবশ্যই স্টার্টআপে কাজ করতে গেলে হয়ত আপনাকে অনেক বেশি কাজ করতে হবে। তবে মজার ব্যাপার হল আপনি আপনার নিজের কাজগুলো কোনটি কখন করবেন, তা নিজের মতন করে সিডিউল করে নিতে পারবেন। স্টার্টআপে যদি আপনার উপরে কেউ থাকে, আপনার কেবল তার সাথে এই বিষয়টি নিয়ে একটু আলোচনা করে নিতে হবে। অনেক স্টার্টআপে আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে, পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে কাজ করবার সুযোগ। আপনি পৃথিবীর যেখানেই থাকেন না কেন, আপনি সব কাজ করতে পারবেন রিমোটলি। শুধু মাত্র আপনার কাছে ভালো ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।

নানানরকম টাস্ক

স্টার্টআপে আপনার জন্য কখন কোন সম্ভাবনা কিংবা চ্যালেঞ্জ আসবে আপনি তা বুঝতে পারবেন না। স্টার্টআপে আপনাকে যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করবার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আপনাকে হয়ত প্রয়োজনের তাগিদে নতুন কোন স্কিল খুবি দ্রুত শিখে নিতে হতে পারে। এভাবে স্টার্টআপে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন সকল টাস্ক সম্পাদনা এবং স্কিল উন্নয়নের মাধ্যমে আপনি নিজেকে আরও বেশি দক্ষ করে তুলতে পারবেন।

ক্রিয়েটিভ এনভায়রনমেন্ট

এই বিষয়টি সবার ভেতরই খুবি পরিস্কার যে , একটি মানুষ যে রিস্ক নিয়ে নতুন একটি স্টার্টআপ শুরু করেছে তার ভেতর নিশ্চয়ই অনেক আইডিয়া এবং ক্রিয়েটিভিটি রয়েছে। তারা সবসময় নতুন নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে গবেষণা করে, নতুন নতুন সার্ভিস নিয়ে ভাবে। আর এই কারনে একটি স্টার্টআপে খুবই ক্রিয়েটিভ একটি এনভায়রনমেন্ট বিরাজ করে।

প্রফেশনাল গ্রোথ

একটি স্টার্টআপে কাজ শুরু করা বলতে গেলে আপনার জন্য নতুন নতুন জ্ঞান, স্কিল, এবং অভিজ্ঞতা শেখার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা। স্টার্টআপে আপনাকে একসাথে একাধিক স্কিল নিয়ে কাজ করতে হতে পারে। আপনার একসাথে একাধিক টাস্ক নিয়ে কাজ করতে হতে পারে। আর এসকল কারনে প্রফেশনাল গ্রোথের জন্য স্টার্টআপ অনেক উপযোগী একটি সেক্টর।

বন্ধুত্বপূর্ণ টিম

যেহেতু স্টার্টগুলো অনেক ছোট থেকে শুরু হয়, তাই স্টার্টআপের টিমও অনেক বেশি ছোট হয়ে থাকে। আর এই কারনে একটি স্টার্টআপে নিজের কলিগদের মধ্যকার সম্পর্ক আরও বেশি গভীর হয়। আর এই কারনে স্টার্টআপে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান থাকে।

ক্যারিয়ার সম্ভাবনা

অনেক সময় বড় বড় কোম্পানি একটি স্টার্টআপ যে বেতন দেয় তার চাইতে অনেক বেশি বেতন দিতে পারে। তবে স্টার্টআপ থেকে যেরকম প্রফেশনাল স্কিল এবং প্রফেশনাল সফলতা পাওয়া সম্ভব, তা কিন্তু একটি কর্পোরেট কোম্পানি থেকে পাওয়ায় সম্ভব নয়। স্টার্টআপে কাজ করার ফলে যে অভিজ্ঞতা তৈরি হয়, তা নিজের ওয়ার্ক এক্সপেরিয়েন্সেও অনেক বড় সুবিধা দেয়। আর স্টার্টআপে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে একজন ব্যাক্তি নিজেরও একটি স্টার্টআপ একদম শুরু থেকে তৈরি করতে পারে। আর এই কারনে স্টার্টআপে কাজ করলে ক্যারিয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

একটি সফল স্টার্টআপ মূলত সেটিই যা কোন সমস্যা নিয়ে একটি দারুন সমাধান বের করে। আর সেই সমাধানকে দারুন একটি টেকসই এবং স্কেলেবল বিজনেস মডেলে রূপ প্রদান করে। বর্তমানে বাংলাদেশেও অসংখ্য স্টার্টআপ কোম্পানি আছে, এই কোম্পানি গুলো বহু চড়াই পার করে আজকে দারুন একটি টেকসই অবস্থানে টিকে আছে এবং নিজেদের কার্জক্রম দারুনভাবে পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের এমন কিছু স্টার্টআপ হলোঃ শপআপ, প্রাভা হেলথ, চালডাল, মায়া, সিন্দাবাদ, শাটেল, প্রিয়শপ সহ ইত্যাদি।

ইপ্রজন্ম একটি স্টার্টআপ

আপনি এখন যে ওয়েবসাইটে এই আর্টিকেলটি পড়ছেন, এই ইপ্রজন্ম ওয়েবসাইটও একটি স্টার্টআপ। আপনি যদি কোন ক্যাটেগরিতে ফেলতে চান, তবে ইপ্রজন্ম হচ্ছে একটি লাইফস্টাইল ক্যাটেগরির স্টার্টআপ। ইপ্রজন্ম আপাতত নিয়মিত নানারকম মানসম্মত বাংলা কনটেন্ট প্রকাশ করছে। ইপ্রজন্ম তাদের মূল আয়ের উৎস রেখেছে তাদের এই বাংলা কনটেন্টের মধ্যে নানারকম বিজ্ঞাপন দেখিয়ে। গুগলের বিজ্ঞাপন পরিসেবা গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে এই বিজ্ঞাপনের আয় থেকেই ইপ্রজন্ম প্রাথমিক ভাবে তার আয় করবে। তবে এই মুহূর্তে শুরুর পর্যায়ে বলে ইপ্রজন্মের তেমন কোন আয় নেই। আশা করা যায় ধীরে ধীরে দর্শক প্রিয়তার সাথে সাথে ইপ্রজন্ম সেই অবস্থানে যেতে পারবে। তবে শুরুর দিকে ইপ্রজন্মের আয়ের দিকে গুরুত্ব নেই, ইপ্রজন্মের গুরুত্ব মানসম্মত কনটেন্ট প্রস্তুতির দিকে। মানসম্মত কনটেন্ট থেকে যখন পাঠক ইপ্রজন্মকে বিশ্বাস করতে শুরু করবে, তখনই ইপ্রজন্মের প্রবৃদ্ধি শুরু হবে।

স্টার্টআপের শুরুর পর্যায়ে ইপ্রজন্ম কেবল কনটেন্ট নিয়ে কাজ করছে। তবে ইপ্রজন্মের প্রত্যয় ইপ্রজন্ম কনটেন্টের বাইরেও আইটি সেবা এবং পুর্নাঙ্গ এডটেক কোম্পানিতে নিজেদের পরিণত করবার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে কাজ করবে। তবে এই জন্য বিনিয়োগ, সেই লক্ষ্যে প্রাথমিক ভাবে ইপ্রজন্ম একটি গুগল নিউজ লিস্টেড অনলাইন টেক ও লাইফস্টাইল মিডিয়া হিসেবে কাজ করে নিজেদেরকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করার কাজ করছে।

You're reading eProjonmo, the versatile technology news portal of bd.

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *